জীবনের বর্ণনা কলমে নয়— অনুভূতির সাদা পৃষ্ঠায় আঁকতে হয় ‘ক্যানভাস’। যে ক্যানভাস অসীম আকাশের বারান্দায় ঝুলিয়ে থাকে। লিখিত নয়— অলিখিত ভাবনার নাম জীবন। তবে জীবনের সময়কালে ভিন্নভাবে বোঝার উপলব্ধি হয়— দূরের আলো-অন্ধকার যেমন নিবিড় মনে হয়— তেমনি জীবন, জীবনের দৃশ্য।
তবু আমরা লিখেই প্রকাশ করতে চাই জীবনের মানে— অদৃশ্য গল্পের মতো উপলব্ধির বয়ান বা উপভোগের রসদ। জীবনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণি। বাস্তব জীবনে স্পষ্টবাদী হিসেবে পরীর বিশেষ খ্যাতি রয়েছে।সাহসী নারী হিসেবে বেশ পরিচিত। জীবন নিয়ে সাহসী ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তার মতে— ‘জীবনতো একটাই, বাঁচলে বাঘের মতো, জীবনের পুরোটা উপভোগ করাই তো জীবন।’ জীবন আসলে রংধনুর মতো। সময় পরিবর্তনের মতো জীবনের রং পরিবর্তন হয়, পরিবর্তন হয় অনুভূতি।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণির জীবন উপলব্ধি একটু ভিন্ন রকম। তার ভাবনাও যুদ্ধের ময়দানের আকাশের মতো। যুদ্ধ করে বেঁচে থাকাটাই পরীর কাছে জীবনের স্বার্থকতা। জটিলতাকে মোকাবিলা করে সরল বাক্যে পরিণত করার নাম জীবন— জীবনের বাস্তবতা। হাতের মুঠোয় এই বাস্তবতা নিয়েই জনপ্রিয় এই নায়িকার পথ চলা।পরীমণি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সরব। নিজের কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ছবি নিয়মিত পোস্ট করার পাশাপাশি নিজের অনুভূতির কথাও লিখে জানান।
বৃহস্পতিবার একটি ছবি পোস্ট করে তিনি তার জীবন উপলব্ধি প্রকাশ করেন— ‘জীবন হলো আইসক্রিমের মতো! কামড়ে খাওয়ার তাড়া থাকতে নেই। এতে স্বাদ অনুভব হয় না, শুধু খাওয়াটাই হয়। স্বাদ পেতে হলে চেটেই খাও।তোমার ঠোঁট, জিভ, দাঁত, গলা, চিবুক আর তোমার পাকস্থলীকে টের পেতে দাও এর হিম! জীবনও তাই, শুধু সুখটুকুতে এর বিস্বাদ ধরে। তাই তাকেও এর কান্না, দুঃখ, হতাশা, আনন্দ, বেদনা, ভালোবাসা সবটাই দিও। জীবনের পুরোটা উপভোগ করাই তো জীবন।’
জীবন উপলব্ধিও মতো তার শোবিজে আশার গল্প একেবারে ভিন্ন রকম। শোবিজে যাত্রা শুরু ছোট পর্দার মাধ্যমে। তবে ২০১৫ সালে ছবি মুক্তির আগেই দুই ডজনের বেশি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। এমন যাত্রায় হৈচৈই ফেলে দিয়েছিলেন পরীমণি।
‘ভালোবাসা সীমাহীন’ ছিল তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। প্রথম ছবিতেই সম্ভাবনার জানান দিয়েছিলেন তিনি। এরপর বেশকিছু ছবিতে অভিনয় করলেও তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ‘স্বপ্নজাল’ ছবি। সর্বশেষের যে অর্জন সেটাও তার জীবনের বড় অর্জন— দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হন তিনি।
ছোট পর্দার জনপ্রিয় পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী গত বছর নির্মাণ করেছিলেন তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘বিশ্বসুন্দরী’। এই সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন পরী-সিয়াম। মহামারীর কারণে থমকে যাওয়া চলচ্চিত্রজগতে ‘বিশ্বসুন্দরী’ নিয়ে এসেছিল আশার আলো। সেই আলোয় শোবিজের সবাই নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন।
সিনেমাটি গত ১১ ডিসেম্বর সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। করোনার চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে সিনেমাটি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে যায় দর্শক। টানা চার মাস ধরে রুপালি পর্দায় চলে ‘বিশ্বসুন্দরী’। একটি সিনেমা টানা চার মাস হলে চলেছে— বিষয়টি ইতিবাচক হিসাবে নিয়েছিলেন সবাই। প্রথম সিনেমা নির্মাণ করেই প্রশংসায় ভেসেছেন পরিচালক চয়নিকা।
অভিনয়ের জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছেন সিয়াম-পরীমণিসহ পুরো টিম। তবে বিশেষ করে পরীর অভিনয় অনবদ্য। তবে বিভিন্ন কারণে অনেকেই সিনেমাটি দেখতে পারেনি— সাধ্য বা সুযোগের সীমাবদ্ধতা ইচ্ছা দরজায় তালা দিয়ে রাখে। তাই প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখা হয় না। এসব দর্শকের জন্য সুসংবাদ হলো, এবার টিভির পর্দায় দেখা যাবে চয়নিকা চৌধুরীর ‘বিশ্বসুন্দরী’।
৩০ ও ৩১ জুলাই সন্ধ্যা ৭টায় সিনেমাটি ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হবে মাছরাঙা টেলিভিশনে। এই সুযোগে আরো কিছু দর্শক দেখতে পারবেন সিনেমাটি। অনেকের মতামতও পাওয়া যাবে ভিন্নভাবে। জীবনের সব জটিলতা বিদায় জানিয়ে পরীমণি স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। এখন ব্যস্ত আছেন নতুন সিনেমা ‘প্রীতিলতা’ নিয়ে।
শোবিজে জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমণির ধ্যানজ্ঞান এখন ‘প্রীতিলতা’ সিনেমা নিয়ে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রথম নারী শহীদ বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। তার জীবনী অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে চলচ্চিত্রটি।
এর নাম ভূমিকায় দেখা যাবে পরীমণিকে। গোলাম রাব্বানীর চিত্রনাট্য ও সংলাপে এটি পরিচালনা করছেন রাশিদ পলাশ। আগামী মাসে এ সিনেমার দ্বিতীয় দফার শুটিং শুরু হবে।